Halloween Costume ideas 2015

সাপের সাথে পাঠদান !


নবীউর রহমান পিপলু: চলনবিলের দুর্গম ডাহিয়া গ্রাম। চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে। এই গ্রামের এক প্রান্তের ডাহিয়া পিজিডি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাটির তৈরি ঘরে শিক্ষার্থীদের সাপ আতংক নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। এবারের ভয়াবহ বন্যার কারণে চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলার ৩শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একশটি পানিতে নিমজ্জিত হয়। অবশিষ্ট অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকলেও ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে না। তবে চলনবিলের  দ্বিপ গ্রামগুলোর চারিদিকে পানি থৈ থৈ করায় সাপসহ বানভাসী বন্য প্রানি ওই সব গ্রামের স্কুল সহ মানুষের বাড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। ডাহিয়া পিজিডি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাটির তৈরী ঘরে আশ্রয় নেয়া সাপের উপদ্রব বেশী। মাটির তৈরি ওই স্কুল ঘরে ইঁদুরের গর্তে সহজেই আশ্রয় নিয়েছে সাপ। একারণে ক্লাস চলাকালীন গর্ত থেকে সাপ প্রায়ই বের হয়ে আসে। এসময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় আতংক। সাপ  চলে যাওয়া অথবা মেরে ফেলার পর আবার ক্লাস শুরু হয়। এবারে বন্যার পানি প্রবেশের পর থেকে এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের একরম সাপের সাথে ক্লাস করতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা মাটির ঘরের ইঁদুরের গর্তে প্রায়ই সাপ দেখতে পায়। ক্লাসের সময় ভয়ে তারা কখনও কখনও পা উঠিয়ে রাখে। সাপের আতংক থাকলেও তারা নিজেরাই ক্লাস করছে আগামী পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের জন্য।
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আব্দুল আলিম মুনিরা খাতুন জানায়, সাপ দেখা গেলেও এখনও কাউকে সাপে কাটেনি। তারা প্রায় এক মাস ধরে সাপ অতংক নিয়েই ক্লাস করছে।
৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আসলাম সুমনা জানায়, সামনের রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওযায় ঝুকি নিয়ে স্কুলে আসতে হয়।  চারিদিকে পানি থাকার কারণে তাদের নৌকা করে স্কুলে আসতে হয়। কখনও কখনও নৌকা থেকে পানিতে পড়ে বই পুস্তক নষ্ট হয়ে যায়। মৃত্যুর ঝুকিঁও রয়েছে। বন্যার কারনে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। সাঁপ তাড়ানোর ঔষধ সহ  গ্রামের ভিতর শান্তি ঘোষের বাড়ির কাছে একটি বাঁশের সেতু করলে তাদের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসতে হবে।
স্কুলের সহাকীর শিক্ষক সেলিনা খাতুন জানান, ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটিতে প্রায় সাড়ে তিনশছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়ন করছে। শিক্ষক রয়েছেন ১৪ জন। একটি পাকা ভবন থাকলেও  তাতে দুটি শ্রেনীর বেশী ক্লাস নেওয়া যায় না। ফলে মাটির তৈরি ঘরেই ক্লাস নিতে হয়।  প্রতি বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। এতদসত্বেও  শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সম্মতিতইে ক্লাস চালু রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় দুজন শিক্ষক প্রশিক্ষন গ্রহণ করেছেন।
অপর সহকারি শিক্ষক ওমর ফারুক জানান, বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রব বাড়লেও এপর্যন্ত কেউ সাপের দংশনে মারা যায়নি। ইতিপুর্বে কয়েক বছরে অন্তত  ১০ জনকে সাপে কাটলেও কেউ মারা যায়নি। অন্য কোন ঘর না থাকায় মাটির ঘরেই ক্লাস নিতে হয়। তবে বর্ষা মৌসুমে সর্তক দৃষ্টি রেখেই  ক্লাস নেওয়া হয়। এছাড়া সাপ তাড়ানোর ওষধও প্রয়োগ করা হয়। নতুন এ্যাকাডেমী ভবন সহ মাটি ভরাট কাজ অনুমোদন হয়েছে ব্েযল তারা জেনেছেন। আগামী বছরে সম্ভবত নতুন ভবনে ক্লাস করবে শিক্ষার্থীরা।

এবিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ইইতমধ্যে লাখ টাকা ব্যয়ে স্কুল ভবনের ধারে ভাঙ্গনরোধে মাটি ভরাট করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে নতুন একাডেমীক ভবন নির্মান করা হবে। বন্যা মৌসুমে ওই ভবনটি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া স্কুলের সামনের রাস্তাটি উচু করা সহ পাশেই বিনোদন কেন্দ্র মুজিব কেল্লা নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

Post a Comment

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget