Halloween Costume ideas 2015

যে ঘড়ি দু’শ বছর ধরে নির্ঘুম সময় দিয়ে যাচ্ছে!


নবীউর রহমান পিপলু: নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির ঘড়িটি প্রায় দু বছর ধরে নির্ঘুম সময় দিয়ে যাচ্ছে। এই  বিশাল রাজ প্রাসাদের একমাত্র প্রবেশ পথের ঢুকতেই চোখে পড়ে প্রকান্ড এক লোহার দরজা। প্রবেশ পথের দরজার ওপর শোভা পাচ্ছে প্রাচীন কালের বিশাল এক ঘড়ি। ঘড়িটি এখনও চলছে। মহারাজা  রামজীবন রানী ভবানীর দেওয়ান দয়ারাম রায় এই দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। নাটোর শহর থেকে প্রায় কিলোমিটার উত্তর পুর্ব কোণে ২৫ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই রাজ প্রাসাদ। প্রাসাদটি বেশ সাজানো। চারিদিকে সুইচ্চ প্রাচীর। ভিতরে রয়েছে রাজ প্রাসাদ। ভেতরে দেশী বিদেশী নানা প্রজাতির বৃক্ষ শোভা পাচ্ছে। প্রাচীর সংলগ্ন গোটা রাজপ্রাসাদের চারিদিকে রয়েছে পরিখা। সামনে রয়েছে ছোট-বড় কয়েকটি কামান। মুর্শিদকুলি খাঁর রাজত্বকালে যশোরের মুহম্মদপুরে  রাজা সীতারাম বিদ্রোহ করলে দয়ারাম রায়  নবাব সৈন্যের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেন এবং সীতারামকে পরাজিত করে বন্দিরে নাটোরে নিয়ে আসেন। এসময় লুন্ঠিত প্রচুর পরিমানের ধনরতœ সঙ্গে নিয়ে আসেন। নবাব তাকে তার সাহসিকতা সততার জন্যএনামহিসেবে একটি তালুক দান করেন। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি এই দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাসাদের চারিদিকে বেশ কয়েকটি মুর্তি বসানো রয়েছে।আছে কৃত্রিম ঝরনা। ১৮১০ সালে দয়ারাম রায়ের মৃত্যুর পর পুত্র জগন্নাথ রায় রাজা হন। পরবর্তীতে তার পুত্র প্রাণনাথ রায় রাজা হন। নি:সন্তান প্রাণনাথের মৃত্যুর পর দত্তক পুত্র প্রসন্ন নাথ রায় রাজ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার সময়ে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির উন্নতি হয় সম্প্রসারণ ঘটে। ১৮৮৭ সালে ভূমিকম্পে এই রাজবাড়ি ধংস হলে রাজা প্রমদানাথ রায় দিঘাপতিয়া রাজবাড়িটি নতুনভাবে সুসজ্জিত করেন। পূর্বের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির বর্তমান নাম উত্তরা গণভবন। 
জনশ্রুতি রয়েছে, রাজা প্রমদানাথ রায়ের ঘড়ি বাড়ি প্রীতি ছিল। তিনি বিদেশ থেকে নানা ধরনের ঘড়ি তৈরি করে এনে প্রাসাদের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করতেন। এমন একটি ঘড়ি ছিল যা ১৫ মিনিট পর পর জলতরঙ্গের সুর ছড়িয়ে বেজে উঠত। রাজবাড়ির প্রবেশদ্বারের ওপর প্রকান্ড ঘড়িটিও বিদেশ থেকে এনে স্থাপন করা হয়। ইতালির ফ্লোরেন্স থেকে ঘড়িটি আনা হয়। বেশ কয়েক বছর আগে ঘড়িটি নষ্ট হয়ে যায়। পরে বিশেষজ্ঞ আনিয়ে সারিয়ে নেওয়া হয়। তবে গণপুর্ত বিভাগের নিয়োজিত  রাজবাড়ির তত্বাধায়ক সবুর খান জানান, বহু প্রাচীন এই ঘড়িটির যন্ত্রাংশ পাওয়া যায়না। ঘড়িটি নষ্ট হয়নি। ঘন্টা মিনিটের কাঁটা চলতে গিয়ে আংশিক ক্ষয় হয়ে যায়। পরে তা সারিয়ে নেওয়া হয়। এখন ঘড়িটি ঠিক সময় দিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রবেশ দ্বারের ওই ঘড়িটির এক পাশের ক্ষয়ে যাওয়া ঘন্টার কাটা সামান্য দেরীতে চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন রায় জানান, আগে বহুদুর থেকে ঘড়িটির ঘন্টাধ্বনি শোনা যেত। কিন্তু এখন দুর থেকে ঘন্টাধ্বনি শোনা না গেলেও ঘড়িটি প্রায় দু বছর ধরে দিনরাত ঠিক সময় দিয়ে যাচ্ছে।





Post a Comment

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget