ফজলে রাব্বীঃ নাটোরের
হালতি বিল
এখন ভ্রমন
পিপাসুদের কাছে ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবেই
পরিচিতি লাভ
করেছে।
দেশের বৃহত্তম বিল হিসেবে পরিচিত
চলনবিল ছাড়াও
নাটোরে রয়েছে
হালতি বিল।
নাটোরের নলডাঙ্গা
উপজেলার একপ্রান্তে
প্রায় ৪০
হাজার একরের
বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে এর অবস্থান।
ব্রিটিশ সরকারের
সময়ে এই
বিলে ঝাঁকে
ঝাঁকে বিরল
প্রজাতির ‘হালতি’ পাখী বসতো বলেই
এর নামকরণ
করা হয়েছিল
হালতি বিল।
তখন ব্রিটিশ
সরকারের লোকজন
এই বিলে
আসতেন সেই
হালতি পাখী
শিকারে। আর
দীর্ঘদিন পরে
আবার এখন
সবাই আসেন
এই বিলের
দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য উপভোগ করতে।
বর্ষার এই সময়টা
এলেই মন
ছুটে চলে,
নাটোরের কক্সবাজার
খ্যাত বিলহালতির
বুকে। যে
দিকে চোখ
যায় শুধুই
অথৈ জলরাশি।
চোখ মেললে
দেখা যায়,
সাপের ফেনার
মত ঢেউ,
আর
ঢেউ ভেঙ্গে ছুটে চলে শ্যালো
চালিত নৌকাগুলো।
মাঝে মাঝে
দিগন্ত রেখায়
সবুজের কারুকাজ।
নাটোর শহর
থেকে প্রায়
আট কিলোমিটার
দূরে এ
বিলের অবস্থান।
হালতিবিলকে দেশের সবচেয়ে গভীর বিল
বলা হয়ে
থাকে। প্রায়
বার মিটার
গভীর এই
বিলে, প্রায়
সারা বছরই
পানি থাকে।
বর্ষায় পানির
পরিমাণ বেড়ে
হয়ে যায়
অনেক বেশি।
শুকনো মৌসুমে
বিলের আয়তন
কমে গেলেও
তা প্রান
ফিরে পায়
বর্ষা মৌসুমে।
সামনে ঈদকে
কেন্দ্র করে,
প্রতিদিন দুপুরের
পর থেকেই
আসতে থাকেন
দর্শনাথীরা। এর ফলে স্থানীয় বাজার
এলাকায় ব্যাবসায়ীদের
ব্যাপক বেচাকেনা
বেড়ে যায়।
এই মৌসুমটায়
অনেক বেকাররাও
খুজে পায়
কাজের সন্ধান।
বর্ষায় সব
বয়েসের মানুষই
আসেন এ
বিলের দৃশ্য
উপভোগ করতে।
দর্শনের অন্যতম
স্থান পাটুল
ঘাট থেকে
হালতিবিলের মধ্যে দিয়ে খাজুরা পর্যন্ত
নির্মিত সড়কটি।
এই সড়কটির বড়
বৈশিষ্ট্য হল,শুকনো মৌসুমে এর
উপর দিয়ে
সবধরনের যানবাহন
চলাচল করে,এবং বর্ষা
মৌসুমে সড়কটি
ডুবে যায়।
তবে যাতায়াতের
জন্য সব
সময় থাকে
সাধারণ ও
শ্যালো চালিত
নৌকাগুলো। বর্ষার শুরুতে ও শেষে সড়কের
দুধারে পানি
থাকলেও সড়ক
দিয়ে চলাচল
করা যায়,নিজস্ব গাড়ী
থাকলে এ
দৃশ্য উপভোগ
করা আরও
সহজ হয়ে
ওঠে। আর
রাস্থা দিয়ে
হাটার সময়
সমুদ্র সৈকতের
আমেজ পাওয়া
যায়। দুপাশে
পানি থাকায়
মাঝে মাঝে
ছোট বড়
ঢেউ আছড়ে
পরে। বিলের
পশ্চিশ দিকে
মাধনগর থেকে
নলডাঙ্গা পর্যন্ত
রেল লাইন
জুড়ে লাখো
পর্যটকের উপচে
পরা ভিড়
জমে। পাটুল
থেকে প্রতিদিন
যতদূরে যাওয়া
যায় রাস্থা
দিয়ে হেঁটে
চলেন দর্শনাথীরা।
কেউ কেউ
দল বেধে
আবার অনেকে
পরিবার নিয়ে
নৌকায় চেপে
ভেসে চলেন
বিলের মধ্যে।
নাটোর অঞ্চলের
মানুষের ভ্রমনের
এমন সুযোগ
আগে আর মেলেনি।
দর্শনাথীরা অন্যান্য জেলা গুলো থেকে
আসেন সৌন্দর্য
উপভোগ করতে।
এক্ষেএে অবশ্য
সাংবাদিকদেরও ভূমিকা রয়েছে বহু গুন।
আর মাটির
উপর জল,
আর জলের
উপর ঢেউ
এই নিয়ে
বসবাস হালতি
বিলাঞ্চলের জনগণের। বর্ষায় এই বিলে
চোখ মেললে
দেখা যাবে
হালতি, নুরিয়াগাছা,
খোলাবাড়িয়াসহ অন্য গ্রাম যেন এক
একটি ভাসমান
দ্বীপ। বিলাঞ্চন
দেশের উত্তরাঞ্চলের
সম্ভাবনাময় অথচ বিপন্ন জনপদ। বর্ষায়
এই জনপদকে
কুলহীন সাগরের
মত দেখায়।
অন্য দিকে
শীতে হয়ে
উঠে দিগন্ত
সবুজ প্রান্তর
যেখানে দোল
খায় সোনালী
ধানের শীষ।
তখন এসব
জনপদের দিকে
তাকালে চোখ
জুড়ে যায়।
বর্ষায় বিভিন্ন
নদীর পানি
বেড়ে বিলে
প্রবেশ করে।
বর্ষায় বিলে
প্রকৃতি হয়ে
উঠে ভয়াবহ
উত্তাল। সামান্য
বাতাসে বিলে
প্রচন্ড ঢেউ
উঠে, বড়
বড় ঢেউ
আচড়ে পড়ে
গ্রামগুলোর উপর। বর্ষায় সময় মাছের
নিরাপদ আশ্রয়
স্থল হিসাবে
বিবেচনা করা
হয় বিলকে।
তাই এই
মৌসুমে ভ্রমন
পিপাসুদের কাছে হালতিবিল হতে পারে
উপযুক্ত ভ্রমন
গন্তব্য।

Post a Comment