Halloween Costume ideas 2015

টার্কি পুষে আশার আলো দেখছেন নাটোরের কাশেম কারী


মামুনুর রশীদ: কাশেম কারী পেশায় একজন সফল মাছ চাষী। বাড়ি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামে। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে মাছ চাষ করে পেয়েছেন খ্যাতি। হয়েছেন আর্থিক ভাবে লাভবান। তবে এবার তিনি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টিয়ে মাছ চাষের পাশাপাশি পরীক্ষামূলক ভাবে টার্কি মুরগীর খামার গড়েছেন। শুরুতেই তিনি মোট ১০০টি বাচ্চা কিনেছেন। একেকটি বাচ্চার দাম পড়েছে এক হাজার টাকা করে। তার খামারের টার্কির মুরগীর বয়স এখন ৭০ দিন। ওজন প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি  করে হয়েছে।
কাশেম কারী জানান, বাচ্চা কেনা থেকে এপর্যন্ত  খাবার বাবদ মাত্র ১০ হাজার চিকিৎসা বাবদ দুই হাজার মাত্র টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজার দরে এই অবস্থাতেই তার খামারের টার্কির দাম পাওয়া যাবে অন্তত  এক লাখ আশি থেকে নব্বই হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে এই মুহুর্তে তার মুনাফা পাওয়া যাবে ৮০ থেকে  ৯০ হাজার টাকা। অর্থাৎ  মাস হিসাবে ধরলেও  তার খরচ বাদে মাসিক আয় দাঁড়াবে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। আর পুর্ণ বয়স্ক হওয়ার পর বিক্রি করলে আরো বেশী লাভ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, টার্কি পালনে প্রচুর ধৈর্য্য আর পরিশ্রম দরকার হয়। সার্বক্ষনিক এর পেছনে সময় দিতে হয়। তবে টার্কি পালনে অন্যান্য পশু- পাখি পালনের চেয়ে তুলনা মুলক খরচ কম হয়।  তাই ঠিকঠাক পরিচর্যা আর  কঠোর পরিশ্রম করতে পারলে টার্কি পালনে সুফল পাওয়া যাবে। এজন্য তিনি তার খামারের পরিধি টার্কির সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা করছেন। ইতিমধ্যে সেডঘর প্রশস্তকরন কাজও সম্পন্ন করেছেন। তিনি মাছ আর টার্কি চাষ এক হাতে সামলাচ্ছেন। আশার আলো দেখছেন টার্কি পালনে।
কাশেম কারী বলেন, টার্কি খামারে বেশী পুঁজি বিনিয়োগ দরকার হবে। যাদের পুঁজি কম, তাদের জন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে পারলে টার্কির খামার প্রসার লাভ করবে এবং বেকার তরুণ যুবকদের আত্ম- কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে  সহায়ক হবে।
এদিকে নাটোর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন জানান, টার্কি (ঞঁৎশবু) মেলিয়াগ্রিডিডিই পরিবারের এক ধরনের বড় আকৃতির পাখি বিশেষ। এগুলো দেখতে মুরগির বাচ্চার মতো হলেও তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। এরা পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। পালনের জন্য উন্নত অবকাঠামো দরকার হয় না এরা প্রতিদিন মোট খাদ্যের ৫০-৬০ ভাগ নরম ঘাস খায়। তাই খাবার খরচ কম।

রোগবালাই (বার্ড ফ্লু, গুটি বসন্ত, ঠা-াজনিত রোগ ছাড়া এখন পর্যন্ত এদের অন্য কোনো রোগ পরিলক্ষিত হয়নি) কম বলে চিকিৎসা খরচ কম। মাংস উৎপাদনের দিক থেকে খুবই ভালো ( মাস বয়সে - কেজি) পাখির মাংস হিসেবে এটা মজাদার এবং কম চর্বিযুক্ত। তাই গরু বা খাসির মাংসের বিকল্প হতে পারে। একটি মেয়ে টার্কির - কেজি এবং পুরুষ টার্কি -১০ কেজি ওজন হয়। এদের মাংস উৎকৃষ্ট স্বাদের। তিনি জানান, ঘাস, পোকামাকড়, সাধারণ খাবার খেতে এরা অভ্যস্ত, তবে উন্নত খাবার দিলে ডিম মাংসের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। - মাস বয়সের টার্কি ক্রয় করা ভালো, এতে ঝুঁকি কম থাকে। এরকম বয়সের এক জোড়া টার্কিও দাম হবে প্রায় ৪৫০০-৫০০০ টাকা। প্রথমে বাণিজ্যিকভাবে শুরু না করে -১০ জোড়া দিয়ে শুরু করা ভালো, কারণ তাতে সুবিধা অসুবিধাগুলো নির্ণয় করা সহজ হয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেকের ব্রয়লার মুরগির মাংসের ওপর অনীহা আছে। তাদের জন্য এটা হতে পারে বিকল্প প্রিয় খাবার। প্রোটিনের নতুন আরেকটি উৎস হিসেবে টার্কি হতে পারে বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত।

Post a Comment

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget