প্রতিবছর মার্চ অথবা
ডিসেম্বর মাস
ফিরে এলেই
মনের কোঠায়
এসে ধাক্কা
দিতে থাকে
১৯৭১ সালের
মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো। দীর্ঘ ৪৫ বছরে
মনের স্মৃতি
কোঠা থেকে
অনেক কিছুই
হারিয়ে যেতে
বসেছে। মনে
করার চেষ্টা
করেও অনেক
ঘটনায় মনে
করতে পারছি
না। মুক্তিযোদ্ধাদের
ভিরে সবকিছু
ওলটপালট হয়ে
যাচ্ছে। গুছিয়ে
বলতে পারিনা
এখন। অন্যের
কাছে জানতে
গিয়েও নানা
শংকা ভির
করতে থাকে।
কোনটি সঠিক
তা নিয়ে
দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
মেলাতে পারি
না আমার
জানা স্বাধীনতা
যুদ্ধের নয়
মাসের এলাকার
নানা ঘটনার
কাহিনী। প্রথম
প্রতিরোধের উত্তাল আন্দোলন ছাড়া যেখানে
যুদ্ধের ছিটে
ফোটাও হয়নি,
সেখানে মুক্তিযুদ্ধের
কাহিনী সাজিয়ে
বলা হচ্ছে।
বেড়ে যাচ্ছে
বীর মুক্তিযোদ্ধার
সংখ্যা। তবে
এটা ঠিক
৭১ এর
৭ মার্চ
জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঐতিহাসিক
ভাষণের পর
তৎকালীন পুর্ব
পাকিস্তানে বসবাসকারী সাড়ে ৭ কোটি
বাঙ্গালীর প্রায় সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়
স্বাধীনতার জন্য। ৭ মার্চ ঢাকার
রেস কোর্স
মাঠে বঙ্গবন্ধুর
ঐতিহাসিক ভাষণের
স্বাধীনতার ঘোষণার পর গোটা পুর্ব
পাকিস্তানে বাংলা ভাষাভাষীর মানুষদের মধ্যে
যুদ্ধের প্রস্তুতি
চলতে থাকে।
সব বয়সের
মানুষ যুদ্ধে
অংশ নেয়।
সবাই যুদ্ধে
অংশ না
নিলেও দেশের
মুক্তি কামনা
করেছেন সকলেই।
তবে পাকিস্তানি
শাসকদের পক্ষেও
সেসময় অবস্থান
নিয়েছেন বাঙ্গালীদের
একটি অংশ। ৭১ এর ১৬
ডিসেম্বর বিজয়
অর্জিত হওয়া
পর্যন্ত সারা
দেশে পাক
সেনাদের সাথে
মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের বিরত্তগাথা ইতিহাস রয়েছে।
সে দিক
থেকে নাটোরে
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ছিল হৃদয়বিদারক
ইতিহাসে সমৃদ্ধ।
যুদ্ধের নয়
মাস নাটোর
ছিল উত্তরবঙ্গের
বধ্যভুমি। সদর উপজেলার ছাতনী-ভাবনী,
ফতেঙ্গা পাড়া,
বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, লালপুরের
গোপালপুর নর্থবেঙ্গল
সুগার মিল,গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি,
সিংড়ার হাতিয়নদহ
ও কলম
গ্রামে চালানো
হয়েছে গণহত্যা।
এছাড়া দেশের
বিভন্ন অঞ্চল
থেকে ধরে
এনে হত্যা
করে চলনবিল
অধ্যুষিত নাটোরের
বিভিন্ন খালবিলে
মৃতদেহ ফেলে
দেওয়া হয়েছে।
কোথাও কোথাও
মৃতদেহগুলি একত্রে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
এসব গণহতার
মধ্যে ছাতনী
ও তার
আশের পাশের
গ্রাম থেকে
ঘুমন্ত প্রায়
৪শ মানুষকে
ধরে পিঠমোড়া
করে বেধে
ছাতনী স্লুইস
গেইটে দাঁড়
করিয়ে ব্রাশ
ফায়ার ও
জবাই করে
হত্যা করা
হয়। হত্যা
নিশ্চিত করতে
তাদের শরীরে
এসিড ছিটিয়ে
দেওয়া হয়।
সে সময়ের
এমপি নাটোরের
অবিসংবাদিত প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা শংকর
গোবিন্দ চৌধুরীর
বাড়ি ছাতনী
গ্রামে হওয়ায়
এই জনপদের
অধিকাংশ মানুষ
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। একারণে পাকিস্তানী
বাহিনী এবং
তাদের এদেশীয়
দোসর রাজাকার-আলবদর ও
অবাঙ্গালীদের আক্রোশে পড়ে এই গ্রাম।
অবাঙ্গালী হাফেজ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে
পাক বাহিনী
সহ কয়েকশ
অবাঙ্গালী ৭১’এর ৪ জুন
গভীর রাতে
ছাতনী গ্রাম
সহ আশেপাশের
১০ টি
গ্রামে ঢুকে
ঘুমন্ত মানুষদের
ধরে পিঠমোড়া
করে বেঁেধ
ছাতনী স্লুইস
গেটে এনে
জড়ো করে।
প্রথমে গুলি
ও ধারালো
অস্ত্র দিয়ে
খুঁচিয়ে হত্যা
করার পর
এসিড ছিটিয়ে
দেয়া হয়।
এইসব শহীদদের
রক্তে লাল
হয়ে যায়
ছাতনীর মাটি
এবং
ঘটনাস্থলের পাশের একটি
পুকুর। পরে
এসব শহীদদের
লাশ ছাতনী
স্লুইস গেট
সহ আশেপাশের
পুকুর ও
ডোবায় মাটি
চাপা দেয়া
হয়। পরে
ছাতনী স্লুইস
গেইটের কাছে
একটি স্মৃতি
স্তম্ভ নির্মান
করা হয়েছে।
নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের তৎকালীন প্রশাসক
আনোয়ারুল আজিম
সহ মিলের
প্রায় অর্ধশত
কমকর্তা কর্মচারীকে
মিলের অভ্যন্তরের
গোপাল পুকুর
পারে ব্রাশ
ফায়ার ও
বেয়োনেট দিয়ে
খুচিয়ে হত্যা
করা হয়।
এসব শহীদদের
স্মরনে গোপাল
পুকুরের নামকরন
করা হয়েছে
শহীদ সাগর।
ফতেঙ্গাপাড়া, মোহনপুর, নাড়িবাড়ি, হাতিয়নদহ ও
কলম গ্রামের
গণকবরস্থানে স্মৃতিস্তম্ভ
নির্মাণ করা
হয়। মর্চে
স্বাধীনতা দিবস ও ডিসেম্বরে
বিজয় দিবস
এলে এই
সব স্মৃতি
সৌধ বা
স্তম্ভ ধোয়া
মোছা করা
হয়। আর
সারা বছর
থাকে অরক্ষিত।
এসব গণকবর
ও স্মৃতি
স্তম্ভের পবিত্রতা
নষ্ট হয়
বছরের অধিকাংশ
সময়।
নাটোরে বড় ধরনের
কোন লড়াই
না হলেও
প্রথম প্রতিরোধে
৩০ মার্চ
লালপুরের ময়না
গ্রামের যুদ্ধ
ছিল বাংলাদেশের
প্রথম সম্মুখ
যুদ্ধ। পাকসেনারা
পথ ভুলে
ময়না গ্রামে
আশ্রয় নেওয়ার
খবরে গোটা
জেলার মুক্তিকামী
মানুষ বন্দুক,
ইয়ার গান,
লাঠি শোঠা
বল্লম, দা,
কোদালসহ বিভিন্ন
দেশীয় অস্ত্র
নিয়ে ওই
গ্রাম ঘিরে
ফেলে। কয়েকজন
পুলিশ ও
তৎকালীন ইপিআর
সদস্য এই
যুদ্ধে অংশ
নেন। এই
যুদ্ধে ভাড়ি
অস্ত্র বলতে
ইপিআর সদস্যদের
হাতে ছিল
থ্রি নট
থ্রি ও
মার্ক ফোর
রাইফেল। ওই
অস্ত্র নিয়েই
শুরু হয় সম্মুখ
যুদ্ধ। যুদ্ধে
৯ পাক
সেনা মারা
যায়। নাটোর
নিচাবাজার এলাকার মঙ্গলা দাস সহ
বেশ ক’জন বাঙ্গালী
শহীদ হন। এরপর আর বড়
ধরনের কোন
লড়াই পাক
বাহিনীর সাথে
হয়নি। ১২
এপ্রিল পর্যন্ত
নাটোরে প্রতিরোধ
টিকিয়ে রাখা
সম্ভব হয়।
১১ এপ্রিল
পাকসেনাদের একটি দল ঢাকা থেকে
নাটোরের পথে
রওনা হওয়ার
খবরে বড়াইগ্রাম
উপজেলার ধানাইদহ
বাজার ব্রীজের
এপারে স্থানীয়
মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেয়। কিন্তু পাকসেনাদের
ভাড়ি অস্ত্রের
মুখে টিকতে
না পেরে
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামীরা পিছু হটতে
বাধ্য হন।
এই যুদ্ধে
বেশ কয়েকজন
মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। কিন্তু কতজন
শহীদ হয়েছিলেন
এর সঠিক
সংখ্যা জানাতে
পারেনি কেউ।
তবে পরে
৪ জনের
লাশ উদ্ধার
করে ব্রীজের
পাশে গণকবর
দেওয়া হয়।
বর্তমানে ওই
স্থানে একট
গণকবর নির্মান
করা হলেও
এর পবিত্রতা
রক্ষা হচ্ছেনা।
স্থানীয় গবাদি
পশু জবাই
করা সহ
প্রকৃতির কাজ
সারেন ওই
গণকবর স্থানে।
একই সময়ে
নাটোর শহরে
প্রবেশ পথে
কয়েকটি স্থানে
প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা হয়। উদ্যেশ্য
ছিল পাক
সেনাদের বহরকে
প্রতিরোধ করার।
১২ এপ্রিল
বিকেল থেকে
এসব প্রতি
বন্ধক পাহারাসহ
যুদ্ধের প্রস্তুতি
নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাসহ
মুক্তিকামী মানুষদের সংখ্যা কমতে থাকে।
ইত্যবসরে খবর
ছড়িয়ে পড়ে
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকসহ জনপ্রতিনিধিরা পাক সেনাদের
ভাড়ি অস্ত্রের
সামনে প্রতিরোধ
টিকিয়ে রাখা
অসম্ভব আঁচ
করতে পেরে
নিরাপদে সরে
যাচ্ছেন। এই
খবর দ্রুত
ছড়িয়ে পড়ায়
শহরময় শুন
শান নিরবতা
বিরাজ করতে
থাকে। ১২
এপ্রিল সন্ধ্যার
পর পাকসেনারা
বিনা প্রতিরোধে
নাটোরে প্রবেশ
করে। তারা
নাটোরে প্রবেশের
আগে মুহু
মুহু ভারি
গোলা বর্ষন
করে। শহরে
প্রবেশের পর
থেকেই শুরু
করে হত্যাযজ্ঞ।
পাকসেনারা নাটোরে প্রবেশের পর মুক্তিযুদ্ধের
সংগঠক, যোদ্ধা
ও মুক্তিকামী
মানুষদের অনেকেই
ভারতে চলে
যেতে সক্ষম
হলেও অনেকেই
দেশের মধ্যে
গা ঢাকা
দিয়ে থাকেন।
পরে তাদের
অনেকেই শান্তিকমিটির
কাছে আত্মসমর্পন
করে দেশের
ভেতরেই থেকে
গেছেন। এদের
অনেকেই পরবর্তীতে
স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে অংশ নেন। স্বাধীনতা
পরবর্তী সময়ে
এদের কেউ
কেউ স্বাধীনতা
যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী
আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে
স্বাধীনতার সুফল ভোগ করেন বা
করছেন।
স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধ
বা মুক্তিযোদ্ধা
ভিত্তিক নানা
সংগঠনের সৃষ্টি
হলেও প্রকৃত
ইতিহাস খুজতে
গিয়ে কখন
কখনও বিস্মিত
হতে হয়।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস
নাটোরে স্থাপন
করা হয়
পাকসেনাদের ২ নং সামরিক হেড
কোয়াটার। এই
সামরিক হেড
কোয়াটার স্থাপনের
কারনে ওই
নয় মাস
এখানে বড়
ধরনের কোন
যুদ্ধ হয়নি।
বিক্ষিপ্তভাবে অভিযান চালাতে গিয়ে ধরা
পড়লে মুক্তিযুদ্ধের
অন্যতম সংগঠক
ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা মজিবর রহমান
রেজা ও
গোলাম রব্বানী
রঞ্জুকে নির্মম
নির্যাতন করে
হত্যা করে
পাক সেনা
ও তাদের
বাঙ্গালী দোসর
রাজাকার ,আলবদর
ও আল
সামস সদস্যরা।
মৃত্যুর আগে
তাদের শরীরে
লোহার পেরেক
ঢোকানো হয়।
মৃত্যুর পর
শরীরে প্রসাব
করে উল্লাস
করে রাজাকার
ও আলবদররা।
গুরুদাসপুরের মশিন্দা এলাকা থেকে তাদের
ধরে চাঁচকৈড়
বাজারের একটি
ঘরে বেঁধে
রেখে কাশেম
মাষ্টারের নেতৃত্বে রাজাকার ও আল বদররা এভাবে
নির্মম নির্যাতন
চালায় তাদের
ওপর। স্বাধীনতার
পর হত্যাকারী
২৪ জনের
বিরুদ্ধে মামলা
হলেও বিচারের
কোন অগ্রগতি
নেই ।
এসব হত্যাকান্ড ব্যতিত
বিশাল হালতি
বিলের দ্বিপ
গ্রাম খোলাবাড়িয়া
গ্রামে ডিসেম্বর
মাসের প্রথম
দিকের যুদ্ধ
ছিল নাটোরের
শেষ যুদ্ধ।
৮ ডিসেম্বর
এই যুদ্ধেও
রসদ ফুরিয়ে
গেলে পাকসেনাদের
সাথে লড়াইয়ে
টিকতে না
পেরে পিছু
হটতে হয়
মুক্তিযোদ্ধাদের। গ্রামের চারিদিকে
থৈ থৈ
করা পানির
কারনে যুদ্ধ
চলে থেমে
থেমে। তিনদিন
ধরে চলা
এই যুদ্ধে
রাজ্জাক নামে
এক মুক্তিযোদ্ধা
শহীদ হন।
খোলাবাড়িয়া থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটার
পর পাকসেনাদের
সহায়তায় স্থানীয়
রাজাকাররা ওই গ্রামে ঢুকে তান্ডব
চালায়। তারা
নারী নির্যাতন
সহ বাড়িঘর
লুটপাট করে
আগুন ধরিয়ে
দেয়। পরে
তারা ওই
গ্রামের প্রবীণ
আলহাজ্ব জসিম
উদ্দিনকে গুলি
করে হত্যা
করে। এদিন
রাজাকাররা নিহত জসিম উদ্দিনের স্বজনদের
তার লাশও
দাফন করতে
দেয়নি। দেশ
স্বাধীনের পর এলাকার মুক্তিকামী মানুষ
রাজাকারদের অনেককেই পিটিয়ে মেরে ফেলে।
তবে বেঁচে
যাওয়া রাজারকারদের
অনেকে এখনও
দাপটের সাথে
চলাচল করছে।
৭১-এর
সেই সব
ভয়াবহ স্মৃতি
বয়ে বেড়ানো
অনেকেই ওই
সব রাজাকারদের
বিচার দাবি
করেছেন।
১৬ ডিসেম্বর ঢাকা
সহ সারা
দেশ শত্র
মুক্ত হলেও
নাটোরের মানুষ
বিজয়ের স্বাদ
পায় এর
চারদিন পর
অথাৎ ২১
ডিসেম্বর। নাটোর পাকিস্তানি বাহিনীর ২
নং সামরিক
সেক্টরের হেড
কোয়াটার হওয়ায়
নাটোরের পার্শ্ববর্তী
এলাকা থেকে
দলছুট পাকসেনারা
নাটোরে এসে
জড়ো হতে
থাকে। ভাতীয়
মিত্র বাহিনীর
কাছে ২০
ডিসেম্বর আত্মসমর্পনের
আনুষ্ঠানুকতা শেষে ২১ ডিসেম্বর সকাল
থেকে নাটোর
শত্রুমুক্ত হয়।
স্বাধীনতার ৪৫ বছরে
এসব ছোট
ছোট যুদ্ধের
কথা অনেকেই
ভুলে গেছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই জানেনা না এসব
ছোট খাটো
যুদ্ধের কথা।
সরকারের সুবিধা
ভোগকারী মুক্তিযোদ্ধাদের
অনেকেই এখন
এসব যুদ্ধের
ইতিহাস নিয়ে
ভাবেননা। যারা
গবেষনা কাজে
নিয়োজিত তারাই
ছুটে বেড়াচ্ছেন
যুদ্ধের ইতিহাস
সংরক্ষনে। কোন কোন বীর যোদ্ধার কাছে
যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত
ইতিহাস জানতে
চাইলে তিনি
নিজের কথা
দিয়ে শুরু
করেন ইতিহাস।
কেউ কেউ
গ্রেনেড (তাদের
ভাষায় গেনেড)
নিয়ে যুদ্ধ
করেছেন। গ্রেনেড
ব্যবহারের ফিরিস্তি তুলে ধরে নিজের
মত করে
গল্প বলতে
থাকেন। ওই
বীর মুক্তিযোদ্ধার
নিজের কথা
শুনতে গিয়ে
সংগৃহিত অন্য
কাহিনীগুলো তখন ভুলে যাওয়ার উপক্রম
হয়।
৭১’ এর প্রথম
প্রতিরোধে যারা অগ্রভাগে ছিলেন তাদের
অনেকেই গত
হয়েছেন অনেক
আগেই। নাটোরে
যুদ্ধের সমৃদ্ধ
বা বিরত্তগাঁথা
ইতিহাস অনেকেরই
অজানা। যারা
কিছুটা
জানতেন তারাও এখন ভুলে যেতে
বসেছেন যোদ্ধাদের
ভিড়ে। একজন
যোদ্ধা হিসেবে
আমার যতটুকু
জানা সেটুকুও
ভুলে যাচ্ছি।
মুক্তিযুদ্ধের নয়মাস নাটোরে যেভাবে বাঙ্গালীদের
হত্যা করা
হয়েছে। এসব
হত্যাকারীদের অনেকেই এখনও জীবিত। বেঁচে
যাওয়া এদের
অনেকে এখনও
দাপটের সাথে
চলাচল করছে।
এদের বিরুদ্ধে
মামলা করেও
বিচার মেলেনি।
৭১-এ
সেই সব
ভয়াবহ স্মৃতি
বয়ে বেড়ানো
অনেকেই এখন
মুক্তিযুদ্ধের কথা ভাবতে চাননা। এদের
বিচার না
হওয়ায় দুর্বল
হয়ে যাচ্ছে
বীর যোদ্ধার
হৃদপিন্ড ।
ভুলতে বসেছি
নাটোরের মুক্তিযুদ্ধের
ইতিহাস।
নবীউর রহমান পিপলু,
নাটোর প্রতিনিধি,
দৈনিক সমকাল/ইটিভি

Post a Comment