প্রান্তজন রিপোর্টঃ উত্তরাঞ্চলের
শস্য ভান্ডার
হিসাবে খ্যাত
চলনবিল অধ্যূষিত
নাটোরের গ্রামীণ
জনপদে মহাধূম-ধামে চলছে আমন
ধান কাটা-মাড়াই। দীর্ঘ
প্রতিক্ষিত ও কষ্টার্জিত সোনা রাঙ্গা
ধান ঘরে
তোলা নিয়েই
বেড়েছে কৃষকের
যত ব্যস্ততা।
এখন ভালোয়
ভালোয় এই
ফসল পেতে
কৃষকরা দিন
রাত ব্যাস্ত
সময় পাড়
করছেন। তবে
সেচ খরচ
ছাড়াই এবার
আশাতীত ফলনে
কৃষকদের চোখে
মুখে বিরাজ
করছে প্রশান্তির
চিহ্ন। কৃষি
সংশি¬ষ্টরা
বলছেন, চলতি
মৌসুমে জেলায়
লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত ৯ হাজার
৮১০ হেক্টর
জমিতে রোপা
আমনের চাষাবাদ
হয়েছে। পাশাপাশি
বিঘাপ্রতি গড়ে আড়াই মণ ধান
বেশি ফলন
পাওয়া যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
সুত্রে জানা
যায়, চলতি
মৌসুমে জেলায়
৫৫ হাজার
৬০০ হেক্টর
জমিতে রোপা
আমন ধান
চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
সেখানে আবাদ
হয়েছে ৬৫
হাজার ৪৯০
হেক্টর জমিতে।
এবার অতিরিক্ত
৯ হাজার
৮১০ হেক্টর
জমিতে চাষাবাদ
হয়েছে। এরমধ্যে
সিংড়া উপজেলায়
২১ হাজার
৮৫০ হেক্টর,
বড়াইগ্রামে ১৪ হাজার ১০০ হেক্টর,
নাটোর সদরে
৯ হাজার
৯৩৫ হেক্টর,
লালপুরে ৬
হাজার ৮০৫
হেক্টর, গুরুদাসপুরে
৫ হাজার
৫০০ হেক্টর,
বাগাতিপাড়ায় ৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর
এবং নলডাঙ্গা
উপজেলায় ৩
হাজার ৫১০
হেক্টর।
সুত্র আরো জানায়,
এসব আবাদি
জমির মধ্যে
৬৪ হাজার
৭৫ হেক্টরে
উচ্চফলনশীল বিনা-৭, ব্রি-৩৯,
ব্রি-৪৯,
স্বর্ণা জাত,
৩৭৫ হেক্টরে
ধানী গোল্ড,
টিয়া, তেজ
হাইব্রিড এবং
১ হাজার
৪০ হেক্টরে
কালোজিরা, চিনি আতপ, দুধসর জাতের
সুগন্ধি ধান
আবাদ হয়েছে।
চলতি বছর
প্রতি হেক্টরে
৪.০৫
টন এবং
বিঘাপ্রতি ১৩.৫ মণ ধান
হিসেবে মোট
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা
নির্ধারণ করা
হয়েছে ২
লাখ ২৫
হাজার ১৪২
টন ধান।
ইতোমধ্যে আবাদি
জমির
প্রায় ৩০ শতাংশ ধান কাটা
হয়েছে।
বড়াইগ্রামের মহিষভাঙ্গা গ্রামের
কৃষক আনোয়ার
হোসেন বিনা-৭ ধান
আবাদ করে
ফলন পেয়েছেন
বিঘায় ১৬
মণ। চর
নটাবাড়িয়া গ্রামের জাকির হোসেন ব্রি-৬২ ধান
কেটে ফলন
পেয়েছেন ১৪
মণ করে।
সিংড়া, লালপুর
ও গুরুদাসপুর
এলাকার কৃষকরা
জানিয়েছেন, এবার ধান কাটা মাড়াই
শেষে ১৬-১৮ মন
হারে উৎপাদন
হচ্ছে আর
প্রতি বিঘায়
উৎপাদন খরচ
হয়েছে ৬-৭ হাজার
টাকা। রোপা
আমনে এবার
তাদের অনেকাংশে
লাভ হয়েছে।
নলডাঙ্গার বুড়িরভাগ গ্রামের কৃষক ফজলার
রহমান ও
হলুদঘর গ্রামের
কৃষক আজাহার
আলী জানান,
এবার বৃষ্টিপাতের
পরিমাণ বেশি
এবং পোকামাকড়ের
আক্রমণ কম
থাকায় সেচ
খরচ ও
কীটনাশক খরচ
কম হয়েছে।
এদিকে কৃষি বিভাগের
এক পরিসংখ্যানে
দেখা গেছে,
বিগত বছরগুলোর
তুলনামূলক চিত্রে জেলায় রোপা আমন
ধানের আবাদি
জমি ও
উৎপাদনের পরিমাণ-উভয়ই ক্রমশ:
বেড়েছে। ২০১৩
সালে ৪৯
হাজার ৪৭০
হেক্টর জমিতে
২ লাখ
১৯ হাজার
৭২১ টন
ধান উৎপাদন
হয়েছে। ২০১৪
সালে ৬০
হাজার ৪৭৫
হেক্টর জমি
থেকে ২
লাখ ৮৯
হাজার ৬৮৬
টন এবং
২০১৫ সালে
৬০ হাজার
৮৬৫ হেক্টর
জমি থেকে
২ লাখ
৯১ হাজার
৪৪৮ টন
ধান উৎপাদন
হয়েছে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ
বিভাগের ভারপ্রাপ্ত
উপ-পরিচালক
মোঃ মঞ্জুরুল
হুদা বাংলানিউজকে
জানান, কৃষকদের
অদম্য প্রচেষ্টা
এবং কৃষি
বিভাগের প্রযুক্তি,
প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তার সমন্বিত
ফলাফলে রোপা
আমনের উন্নত
ফলন অর্জন
করা সম্ভব
হচ্ছে। তিনি
বলেন, সারা
জেলায় উন্নত
ধানের বীজ
তৈরিতে কৃষকদের
সার ও
বীজ সুবিধা
প্রদান করে
১ একরের
২৪০টি এবং
এক বিঘার
৮৬৪টি প্রদর্শনী
প¬ট
স্থাপন করা
হয়েছে। নতুন
প্রযুক্তির সাথে কৃষকদের মেলবন্ধন তৈরি
করতে রিপার
মেশিনে ধান
কাটার মাঠ
দিবস করা
হচ্ছে।

Post a Comment