Halloween Costume ideas 2015

সফলতা অর্জনে শারিরীক প্রতিবন্ধকতা কোন বাধাই নয়: পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে সুখী


নাইমুর রহমান: চলতি জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধী সুখী খাতুন। জন্মের পর থেকেই তার দুটি হাতই অচল। হাত দিয়ে সে কিছুই করতে পারেনা। তবে, হাত নেই তো কি হয়েছে পা দিয়ে লিখেই সে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। দুটি পা তার কাছে দুই হাতের সমান। নাম সুখী হলেও ছোট্র এই মেয়েটি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে প্রতিপালিত হয়ে আসছে। তার দুটো হাতই অচল হলেও কখনও দমে যায়নি সে। তাইতো শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে জন্মের পর থেকেই সে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকায় শারীরিক প্রতিবন্ধী সুখী ভর্তি হয় গ্রামের স্কুলেই। দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী সুখীর লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে এগিয়ে আসেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশীদের আর্থিক সাহায্য সহযোগীতায় এগিয়ে যেতে থাকে সুখীর লেখাপড়া। সদর উপজেলা থেকে মাত্র ৩কিলোমিটার দুরে রায় আমহাটি গ্রামের ইসমাইল হোসেন এবং রিনা বেগমের দুই সন্তানের মধ্যে সুখী বড়। আমহাটি গ্রামের বাড়ীতে গেলে দেখা যায়, কুড়ে ঘরে মা এবং দাদীমার সাথে বাস করে সে। সে নাটোর সদর উপজেলার রায় আমহাটি গ্রামে অবস্থিত এম আর কে দুলু উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এই বছর সে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে। শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও সে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত অতিরিক্ত ৩০মিনিট সময় পরীক্ষা দিতে চায় না সে। অন্যসকলের মত নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা দিতেই সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে সে। শহরের বনলতা উচ্চ বিদ্যালয়ে পরক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সুখী তার হাতের পরিবর্তে দুই পা দিয়ে পরীক্ষার খাতা উল্টাচ্ছে এবং প্রশ্নের উত্তর লিখে যাচ্ছে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের সহকারি সচিব আব্দুর রহমান জানান, সুখী প্রতিটি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে এবং তারা তার চাহিদা মত সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করছেন। তিনি আরো জানান, প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত বাড়তি ৩০মিনিট ব্যবহার না করেই সকল প্রশ্নের উত্তর লিখতে সক্ষম সে।  
এম আর কে দুলু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান জানান, যেদিন সুখী প্রথম বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সেদিনই তিনি তার মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আবিস্কার করেন। এছাড়া, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলেই তার প্রতি অনেক সচেতন এবং সহযোগী। সুখীকে তারা কখনই একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মনে করেন না।
সুখী জানায়, তাকে অনেক দুর পর্যন্ত যেতে হবে। লেখাপড়া শেষে সে আতœনির্ভরশীল হতে চায়। সে প্রমান করতে চায় চায়, জীবনে সফলতা অর্জনে শারিরীক প্রতিবন্ধকতা কোন বাধাই নয়।
অশ্রছলছল চোখে সুখীর মা রিনা বেগম সমাজের সচেতন, দয়াবান লোকের কাছে তার মেয়ের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।

বিষয়টি অবগত হওয়ার পরে সদর উপজেলার বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান সুখীর জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা নিশ্চিত করতে সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে আহ্বান জানান। তিনি আরো জানান, সরকার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। সুখী অন্যান্যদের মত এসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে।

Post a Comment

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget