Halloween Costume ideas 2015

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন অদম্য রুহুলের


নবীউর রহমান পিপলু: বাবা শামছুল মোল্লা দিন মজুরি করে যা পায় তাই দিয়ে চলে রুহুল আমিনদের সংসার। যেদিন কাজ জোটেনা সেদিন অনাহারেই থাকতে হয়। মা তহুরা বেগম গৃহীনি। নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা গ্রামের দিন মজুর পরিবারের ছেলে মেধাবী রুহুল আমিন এবার ঢাকার পান্থপথ এলাকার হামদার্দ পাবলিক কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে এইচএসসিতেও জিপিএ- পেয়ে আবারও ভাল ফলাফল করেছে। মেধাবী রুহুল ৫ম অষ্টম শ্রেণীতেও বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসিতে সদর উপজেলার আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ- পেয়েছিল। অদম্য মেধাবী রুহুল আমিন রেখাপড়া শিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায়। কিন্ত তার প্রবল ইচ্ছাশক্তির লক্ষ্যের চূড়ায় পোৗঁছাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। সেই সাথে জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বেশী করে দুশ্চিায় ফেলেছে তাকে। গত একমাস ধরে জন্ডিসে ভুগছে সে। প্রতিবেশী এক হৃদয়বান শিক্ষক তাকে রাজশাহীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে চিৎিসা করাচ্ছেন। এত কিছুর পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখছে রুহুল।
রুহুল আমিন জানায়, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় স্কুল শিক্ষক মোস্তফা মাষ্টার মোহন তাকে ঢাকার হামদর্দ কলেজে ভর্তি করে দিয়ে আসেন। সেখানে বিনা খরচে লেখাপড়া করানো হয়। দৈনিক সমকালে এসএসসিতে ভাল ফলাফল করার প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় তাকে। ঢাকার হামদর্দ কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ- পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। ঢাকা অথবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে তার ইচ্ছা। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায় রুহুল। কিন্তু অর্থাভাবে তার লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। রুহুল জানায়,স্কুলে লেখাপড়া করার সময় প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক মহসীন আলী মোহন তাকে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছেন। এখনও তিনি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। তার জন্ডিস রোগের চিকিৎসাও তিনি করাচ্ছেন। প্রতিবেশী বন্ধুরা পোশাক বই খাতা দিয়ে সাহায্য করেছে।
প্রতিবেশী বন্ধু নাটোর এনএস সরকারী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র  মোঃ শাহিন আলী জানায়, গরীবের ঘরে জন্ম নেওয়া রুহুল আমিন অসম্ভব ধরনের মেধাবী। স্কুল লাইফে বাবার সাথে মুজুরিও করেছে। মাটির ঘরে ছোট ছাপড়া ঘরে থেকে লেখা পড়া করে সে। বন্ধু বান্ধবদের দেওয়া পোশাক পড়ে স্কুলে গিয়েছে। এবার সে এইচএসসিতেও ভাল ফলাফল করায় গ্রামের সকলেই খুশী।
বাবা শামছুল মোল্লা জানান, প্রতিবেশীরাই তাকে লেখা পড়ার খরচ দেয়। এখন উঁচু ক্লাসের খরচ কে দিবে। উঁচু ক্লাসে পড়তে বেশী টাকা লাগে বলে জেনেছেন। মুজুরি করে যা আয় হয় তা খেতেই চলে যায়। পড়নের কাপড়ও কিনতে হয় ধার কর্জ করে। ছেলে লেখা পড়া করে বড় হতে চায়। তিনি ছেলের ইচ্ছা পুরন করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি ছেলের লেখাপড়ার জন্য সকলের সহায়তা কামনা করেন।
আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী জানান, রুহুল শিশু কাল থেকেই মেধাবী। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও অদম্য চেষ্টা প্রবল ইচ্ছা শক্তির জোরে রুহুল তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে। শুধু প্রয়োজন সামান্য সহায়তা। হৃদয়বানদের সহায়তা পেলে রুহুল দেশের সুনাম বয়ে আনবে।

Post a Comment

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget