প্রয়াত কথাসাহিত্যিক এবং নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের নির্দেশনাতেই অনেক বছর আগে ‘এসো’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন মেহের আফরোজ শাওন। সেই শাওনই এবার ক্যামেরার পেছনে; জাকিয়া বারী মমকে নিয়ে নতুনভাবে তিনি তৈরি করলেন ধ্রুপদী এই প্রেমের নাটকটি।
বড় পর্দায় যুগের পরিবর্তনে সাহিত্যনির্ভর সিনেমার রিমেইক হওয়ার চল নতুন নয়। কিন্তু ছোটপর্দার ক্ষেত্রে এটা সচারচর দেখা যায় না। তাহলে ‘এসো’ পুনর্নিমাণের পেছনের কারণটা কী?গ্লিটজের এমন প্রশ্নের জবাবে শাওন বলেন, “কিংবদন্তী সাহিত্যিকদের সৃষ্টি নির্ভর কাজ কিন্তু একটা সময়ের পরে রিমেইক করতেই হয়। সিনেমার ক্ষেত্রে এটা হরহামেশাই ঘটছে। এমনকী নাটকেও হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একেকটা গল্প নিয়েই তো কয়েকশ বার কাজ করা হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “সেরকমভাবেই একটা সময় আসবে, যখন হুমায়ূন আহমেদের একটি গল্প নিয়ে দশ-বারো বার নাটক-সিনেমা হবে। বলতে গেলে সেই চিন্তা থেকেই ‘এসো’ রিমেইক করা।”
তাহলে কি, এখন থেকে হুমায়ূন আহমেদ-এর পুরানো নাটকগুলোর রিমেইক নিয়মিতভাবেই দেখতে পাবেন দর্শকেরা?
শাওন অবশ্য এ ব্যাপারে খুব একটা আশাবাদী নন।
তিনি বলেন, “আমার মনে হয়না নিয়মিত তার নাটকগুলো রিমেইক করা হবে। তবে, হুমায়ূন আহমেদের ছোটগল্পের সংখ্যা খুব বেশি নয়। সেক্ষেত্রে গেল বছর থেকেই আমি ভাবছি, তার একঘন্টার নাটকগুলো; যেগুলো পুরানো হয়ে গিয়েছে, সেগুলো নতুনভাবে তৈরি করা যায়।”
“এমনিতে এখন বছরে
হুমায়ূন আহমেদ-এর চার-পাঁচটা নাটক
হয়। কিন্তু
আমি আরেকটু
কমিয়ে দিতে
চাইছি। বছরে
হুমায়ূন আহমেদের
একটার বেশি
এক ঘন্টার
নাটক করা
উচিত বলে
আমার মনে
হয় না।
তার চলচ্চিত্র,
ধারাবাহিক ও যে উপন্যাসগুলো রয়েছে
সেগুলো নিয়ে
কাজ করার
সুযোগ অনেক
বেশি।”
দীর্ঘসময় পর ‘এসো’ নাটক নিয়ে
আবার কাজ
করলেন, পুরানো
দিনের কথা
মনে করে
একটুও কি
স্মৃতিকাতর হননি?স্মৃতির পাতা উল্টে শাওন বলেন, “আমি আর ফেরদৌস যখন ‘এসো’ নাটকে কাজ করেছিলাম তখন তিনি কেবলই ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে অভিনয়ে এসেছেন। আর আমিও খুবই অল্প বয়সের ছিলাম। আর তখন তো এখনকার ছেলে-মেয়েদের মতো মাসের তিরিশ দিনই কাজ করতাম না আমরা। পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে দশটা-পাঁচটা অফিসের মতো লাগে। ক্রিয়েটিভিটির জায়গাটাই নষ্ট হয়ে যায়। এসব কথা চিন্তা করলেই স্মৃতিকাতর হয়ে যাই!”
মূল ‘এসো’ নাটকটির গল্প এগিয়েছিলো ল্যান্ডফোনের যুগে দুই তরুণ-তরুণীর প্রেমের গল্প নিয়ে। এখনকার এই মোবাইল ফোনের সময়েও নাটকে ল্যান্ডফোনের ব্যাবহার হয়েছে?
এ প্রসঙ্গে শাওন বলেন, “আমিও নাটকে ল্যান্ডফোনের ব্যবহার করেছি। ‘এসো’ নাটকের থিমটাই হলো টেলিফোনে প্রেম নিয়ে। এখানে ছেলেটির কণ্ঠ শুনে মেয়েটির প্রেম হয়ে যায়। এখনকার সময়ে তো কোন ছেলে কোন মেয়েকে সেলফোনে বিরক্ত করলে তার কলব্লক করা যায়। কিন্তু ল্যান্ডফোনে সেই সুযোগই ছিল না। সেক্ষেত্রে আমরা যদি ল্যান্ডফোন না রাখি, তাহলে নাটকটাই আর দাঁড়ায় না।”
শাওনের মতে মোবাইল ফেনের যুগে এসেও ‘এসো’ নাটকের আবেদন রয়ে গেছে আগের মতোই।
“একটা ছেলে ল্যান্ডফোনে একটা মেয়েকে ফোন করে, মেয়েটা সেই ফোনটা ধরে। ফোনে দুষ্টুমি করে, এই দুষ্টুমি করতে গিয়েই তাদের মধ্যে একটা সখ্যতা তৈরি হয়। আসলে ‘এসো’ খুবই সাধারন, মিষ্টি একটা প্রেমের গল্প। আর তাই ‘এসো’র আবেদন রয়ে যাবে সব যুগেই।”
ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে একটি বেসরকারী চ্যানেলে প্রচারিত হবে নাটকটি। এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম এবং সাজ্জাদ।

Post a Comment