Halloween Costume ideas 2015

ঈদকে সামনে রেখে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে: লালপুরের বেনারসি শাড়ীর কারিগররা




স্টাফ রিপোর্টার: ঈদকে সামনে রেখে লালপুর উপজেলার বেনারসি পল্লী খ্যাত রাকসার ধানাইদহ পাড়ার কারিগররা ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে। রমজানের ঈদ উপলক্ষে এখানকার বেনারসি শাড়ির চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় কারিগরদের যেন এখন দম ফেলার সময় নেই। দিন রাত তারা তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে নিপুন হাতে তৈরি করছে নানান নকশার, নানান ডিজাইনের বেনারসি শাড়ি। তাদের প্রস্তুতকৃত বারকেট, জানিবাহার, টাইটোনিক্স, ফিগার জামদানীসহ নানা নামের নানা ডিজাইনের শাড়ীর কদর ব্যাপক ভাবে বেড়েছে ঢাকা সহ সারাদেশে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেনারসি শাড়ী প্রস্তুতকারী কারিগররা এখন তাদের নিপুন হাতে বেনারসি তৈরিতে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে। তাদের তাঁতের ছন্দে মন ভরে যায়। এলাকাবাসীরা জানান, প্রায় ২২ বছর পূর্বে জাফর মৌলভী প্রথম নিজ বাড়িতে তাঁত বসিয়ে শাড়ী তৈরি করে শহরে সরবরাহ শুরু করে এবং তিনিই প্রথম অঞ্চলে বেনারসি শাড়ী তৈরি করে শহরে বিক্রি করেন। বেনারসির প্রধান কারিগর জাফর মৌলোভী জানান, ২২ বছর পূর্বে তিনি বেনারশি শাড়ী তৈরির জন্য বাড়িতে তাঁত বসান। তার দেখা দেখি ধিরে ধিরে শতাধিক পরিবার তাঁত বসিয়ে শিল্পের সাথে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শিল্পে ধস নামে। ফলে একে একে তাঁত বিক্রি করে অন্য পেশায় চলে যায়। ফলে তাঁতের সংখ্যা কমে ১৫-২০ টিতে নেমে আসে। বর্তমানে ভারতের শাড়ীর আগ্রাসনে তাদের ব্যাবসায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। চাকচিক্যময় ভারতীয় নি¤œ মানের শাড়ী কম দামে বাজারে বিক্রি করায় তাঁতে তৈরি উন্নতমানের শাড়ীর দাম পাওয়া যায় না। তার পরেও হাল ছাড়েননি তিনি। তার তৈরি উন্নত মানের বেনারসি শাড়ির জন্য মহাজনরা অগ্রিম অর্ডার দেন। ঈদ পূজার সময় এর চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে সেখানে ১০-১২ টি তাঁতে উন্নত মানের বেনারসি শাড়ী তৈরি হচ্ছে। বেনারসি শাড়ির কারিগর ইউনুস জানান, একটি শাড়ী তৈরিতে একজন কারিগরের থেকে দিন সময় লাগে এবং  ১২শ থেকে হাজার টাকার সুতার প্রয়োজন হয়। প্রতি শাড়ির জন্য তারা মুজুরী পান হাজার থেকে ১২শ টাকা। প্রতিটি শাড়ী হাজার শত থেকে হাজার শত টাকা হিসাবে মহাজনদের নিকটে পাইকারী দরে বিক্রি করেন তারা। এসব শাড়ী মহাজনরা শহরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে এবং তারা কোম্পানির নামে সিল মেরে খুচরা বাজারে ছেড়ে দেয়। তাদের প্রস্তুতকৃত বারকেট, জানিবাহার, টাইটোনিক্স, ফিগার ইত্যাদি শাড়ির মধ্যে ফিগার সবচেয়ে দামি শাড়ী যার পাইকারী দাম হাজার শত টাকা। আরেক কারিগর আক্ষেপ করে জানান, আমরা এতো কষ্ট করে শাড়ি তৈরি করি অথচ নাম হয় সিল মারা কোম্পানীর। সরকার এটাকে শিল্প হিসাবে ঘোষণা করে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে তখন আমাদের নামেই বাজারে ছাড়া সম্ভব হবে এবং আরও অনেক তাঁত বসানো যাবে। এখন যে সব বেনারসি শহরে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির নামে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে, তখন তা অনেক কম দামে খদ্দেররা কিনতে পারবে।
সরকারী বা বেসরকারী ভাবে সহযোগিতা পেলেবেনারসি শিল্পএকটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্প টিকে থাকবে। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানকার বেনারসি বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

Post a Comment

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget