নবীউর রহমান পিপলু, বিশেষ প্রতিনিধি: নাটোরের এবারের ভয়াবহ বন্যা ও অতিবর্ষণে ১শ’ ৩৫ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ফসল সহ কৃষি সম্পদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বানের পানি নামার সাথে উপযোগী জমিতে নতুন করে রোপা আমন সহ সবজি আবাদ করার জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। একই সাথে কৃষি পুর্ণবাসন প্রকল্পের জন্য ৯শ ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকার চাহিদা দিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাযায়, এবারের ভয়াবহ বন্যা ও অতিবর্ষণে সিংড়া, গুরুদাসপুর, নলডাঙ্গা ও নাটোর সদর সহ জেলায় ১১ হাজার ৭৫৫ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে ৯ হাজার ২৮৭ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২ হাজার ২১৬ হেক্টর জমির বোনা আমন , ১৪৭ হেক্টর জমির রোপা আউশ ও ১০৫ হেক্টর জমির সবজি ফসল পানিতে তলিয়ে গিয়ে বিনষ্ট হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রায় ৩৪ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন ফসল পাওয়া যেত। কিন্তু এসব ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ১শ ৩৫ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আবাদ উপযোগী জমিতে জিরা সাইন জাতীয় ফসল চাষের পরামর্শ দিয়ে ঐচ্ছিক ফসল ভুট্টা, সবজি ও বোরো চাষের আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তাদের আগাম জাতের রবিশস্য চাষ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় এবারের বন্যা ও অতিবর্ষণে ১৩৫ কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পানি নামতে শুরু করায় কৃষকদের আবাদ উপযোগী জমিতে রোপা আমন সহ সবজি চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে উপযোগী জমি না থাকলে জিরা সাইন জাতীয় ফসল যেমন নাজির সাইন, জিরা সাইন, ব্রি-২২, ২৩ ও ৩৪ জাতের ধান চাষে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভযাবহ বন্যা ও অতিবর্ষণের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতিমদ্যে ৯শ ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা কৃষি পুর্ণবাসনের জন্য চাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে বীজের জন্য ১৮৫ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং সারের জন্য ৭শ ৪৬ কোটি টাকা। এবার ৫৫ হাজার ৫৬৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হলেও অর্জিত হয় ৬১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। পানিতে তরিয়ে গেছে ১১ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমির ফসল। জেলার মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১ শ ৪৭ হাজার ১৮৭ হেক্টর। এবার ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী ছাড়াও ভুমিহীন কৃষকদেরও ঋন সহায়তা দেওয়া হবে। যেহেতু তারা অন্যের জমি কট নিয়ে চাষাবাদ করে থাকে। তাদের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার কৃষি পূর্ণবাসনের আওতায় ৫২ হাজার ৯২৬ বিঘা জমি চাষ করে সমুদয় পরিমান কৃষক উপকৃত হবেন বলে তিনি জানান।

Post a Comment