আজকের অতিথি ৪ নং ওয়ার্ড থেকে সদ্য নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য হিসাবে শপথ নিলেন মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (মোস্তাফিজ)। তিনি নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এক স¤ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৭৮ সালের ২৯ জানুয়ারি জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সরদার এবং মাতার নাম মোছাঃ জয়নব বেগম। তিনি নিজ গ্রামের বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৮৮ সালে নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং ১৯৯৩ সালে কৃতিত্বের সাথে তৎকালীন চার বিষয়ে লেটার সহ স্টারমার্ক পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৫ সালে নাটোর এনএস সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হয়ে বিএসসি (সম্মান) ও এমএসসি (রসায়ন) ডিগ্রী অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে নাটোরে ফিরে এসে সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে রসায়ন বিষয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করে অদ্যাবদি সুনামের সহিত কর্মরত আছেন। তিনি দৈনিক প্রান্তজনের স্টাফ রিপোর্টার মোঃ কামাল হোসেনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার নানা দিক তুলে ধরেন। পাঠকদের সুবিধার্থে সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ তুলে দেওয়া হল:
দৈনিক প্রান্তজন: মোস্তাফিজ ভাই কেমন আছেন, জেলা পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচিত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।
মোস্তাফিজ: আপনাকে ধন্যবাদ। প্রথমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। সেই সাথে যারা আমাকে নাটোর জেলা পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচিত হতে সাহায্য করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষ করে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম শিমুল ভাইয়ের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
দৈনিক প্রান্তজন: আপনি রাজনীতিতে কিভাবে উৎসাহিত হলেন?
মোস্তাফিজ: আমার পিতা মোহাম্মদ আলী সরদার স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের তৎকালীন পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য ছিলেন এবং সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। পিতার পথ ধরে আমার রাজনৈতিক দীক্ষা ও মুজিবীয় আদর্শে উদ্বুদ্ব হওয়া। সে সময়ে পঞ্চায়েত কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন নাটোর জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এ্যাড.সাজেদুর রহমান খান। সে সময় থেকেই আমাদের দুই পরিবারের সাথে আতœীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সূত্র ধরে তার বাসায় থেকে পড়াশুনা করে ৬ষ্ঠ শ্রেণী হতে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়েছি। তিনি ও তার পরিবার আমাকে নিজের সন্তানের মত অত্যন্ত আন্তরিকভাবে লেখা পড়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। তিনি আমাকে নিজের সন্তানের মত ভালবাসেন। আমি তাঁর সুস্থ্য জীবন, দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করি। তাঁর সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বে উদ্ধুদ্ব হয়ে রাজনীতিতে আমার সক্রিয় হয়ে উঠা।
দৈনিক প্রান্তজন: আপনি এখন সাংগঠনিক কোন পদে আছেন কিনা?
মোস্তাফিজ: ছাত্রজীবনে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনার কারনে কোন পদ নেইনি কিন্তু বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে অবদান রেখেছি। এছাড়া দলীয় বিভিন্ন কাউন্সিলে যেমন, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে কাউন্সিলর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। বঙ্গবন্ধু পরিষদের ১ম নাটোর জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও বর্তমানে নাটোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি।
দৈনিক প্রান্তজন: পাশাপাশি সমাজিক কোন কাজের সাথে জড়িত আছেন কিনা?
মোস্তাফিজ: সমাজে বাস করি তাই সামাজিক কাজ বলতে এলাকার সুধীসমাজ, আখচাষী ও মিলের কর্মকর্তাদের নিয়ে আখচাষী সমিতি গঠণ করি এতে এলাকার আখ চাষে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। বর্তমানে নাটোর সুগার মিলের সুগারসেচ রোড ডেভেলপমেন্ট কমিটির আখচাষী প্রতিনিধি ও ধরাইল আই এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি।
দৈনিক প্রান্তজন: আপনার নির্বাচনী এলাকার সমস্যাগুলো কি বলে আপনি মনে করেন?
মোস্তাফিজ: আপনারা জানেন যে, আমার নির্বাচনী এলাকা অন্যান্য এলাকা হতে একটু ভিন্ন যেমন, তিনটি উপজেলার চলনবিলের পাশে সিংড়ার হাতিয়ান্দহ, নাটোর সদরের দিঘাপতিয়া, বিল হালতির নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ও খাজুরা সহ মোট চারটি ইউনিয়ন নিয়ে আমার নির্বাচনী এলাকা গঠিত। অবস্থানগত কারনে আমার নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ অবকাঠামোগত ভাবে দুর্বল। বিশেষ করে নলডাঙ্গা উপজেলা নতুন হওয়ায় এখানকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন বেশ জরুরী। যদিও উত্তরা গণভবন আমার নির্বাচনী এলাকার মধ্যে কিন্তু সে নাম অনুযায়ী আমার দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন ততো উন্নত নয়। নামের সাথে সংগতি রেখে আরো অনেক উন্নতি করা দরকার বলে আমি মনে করি। এছাড়া হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন বেশ জরুরী।
দৈনিক প্রান্তজন: আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
মোস্তাফিজ: বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা, দেশরতœ, জননেত্রী শেখ হাসিনার রুপকল্প ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করার লক্ষ্যে আমার সততা, মেধা, শ্রম, যোগ্যতা সহ সকল কিছু প্রয়োগ করে শিক্ষা, আইন-শৃংখলা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, পরিবেশ, পানীয় জল ও স্যানিটেশন, কৃষি, সমবায়, মৎস ও পশুপালন, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন, ক্রীড়া, আত্ম-কর্মসংস্থান, যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামো প্রভৃতি উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে নাটোর জেলা পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডকে একটি উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে চাই।
দৈনিক প্রান্তজন: আপনার সফলতা কামনা করছি সেই সাথে আমদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোস্তাফিজ: আপনাকেও ধন্যবাদ। সেই সাথে আমি মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত ও আপনাদের সকলের দোয়া কামনা করি।

Post a Comment